কোথাও রাত্রিতে এক সমুদ্রের পারে । জীবনানন্দ দাশ । পাণ্ডুলিপি কাব্যগ্রন্থ,২০০৫

কোথাও রাত্রিতে এক সমুদ্রের পারে কবিতাটি কবি জীবনানন্দ দাশ এর পাণ্ডুলিপি কাব্যগ্রন্থের ১০ম খণ্ডে রচিত। যা ২০০৫ সালে প্রকাশিত হয়। গৌতম মিত্র ও ভূমেন্দ্র গুহ-এর সাথে যৌথ সম্পাদনায় এটি প্রকাশিত হয়। কবির অগ্রন্থিত কবিতাবলি নিয়ে প্রকাশিত কবিতা সংকলনগুলোর একটি হলো পাণ্ডুলিপি। এই গ্রন্থটি মোট ১৪টি খণ্ডে বিভক্ত রয়েছে।

 

কোথাও রাত্রিতে এক সমুদ্রের পারে । জীবনানন্দ দাশ । পাণ্ডুলিপি কাব্যগ্রন্থ,২০০৫

 

কোথাও রাত্রিতে এক সমুদ্রের পারে

কবিতা: কোথাও রাত্রিতে এক সমুদ্রের পারে
কবির নাম: জীবনানন্দ দাশ
কবি: জীবনানন্দ দাশ
কাব্যগ্রন্থের নাম: পাণ্ডুলিপির কবিতা

 

কোথাও রাত্রিতে এক সমুদ্রের পারে । জীবনানন্দ দাশ । পাণ্ডুলিপি কাব্যগ্রন্থ,২০০৫

 

কোথাও রাত্রিতে এক সমুদ্রের পারে আছে বন্দরের ঘুম
সেখানে ভূতেরা থাকে- অন্ধকারে- বহুতর জাহাজকে নিয়ে
আয়োজন ক’রে যায়- আমাদের জানালার থেকে তিন বার
তিন ধনু দূরে গেলে সেই সব অকৃত্রিম বামনের দেখা

পাওয়া যায় পিচের মতন কালো অন্ধকারের স্থির ঘ্রাণে
মৌসুমি মেঘের নিম্নে তাহাদের জাহাজের অনর্গল দড়ি
কেবলই অস্পষ্ট ভাবে ন’ড়ে যায়- তাহাদের নিটোল বধির পিঠে তেল
মাঝে-মাঝে হাওয়ার ভিতরে জ্ব’লে প্যারাফিন-আলোর মতন
নিভে যায়- মনে হয় সমুদ্রের গন্ধ, ধূমা, অন্ধকার কেরোসিন-বাতি

জাহাজের ভিজে কাঠে অবিরল শামুকের ঘুম
ঘুম ছাড়া পৃথিবীতে কাহারও হৃদয়ে কিছু নাই আর
সর্বদাই মাস্তুলের কোণে মেঘ চারি-দিকে আকাশের থেকে
কিছু বেশি কালো- গোল- সর্বদাই উত্তরের হাওয়া

ক্ষীণ;- জাহাজের কোনও এক শেষ জানালার কালো জালির ভিতরে
নীড় তার;- চারি-দিকে অগণন দড়ির বুনুনি নেড়ে কেউ
বোঝে না কেন এ-দড়ি ঘুরে গেছে মাকড়জালের মনীষায়
মাথার উপরে মেঘ- সমুদ্রের জলপাই-মলিন পরিধি
জল নয়;- বস্তুত কোথাও জল নেই কোনও দিন।

 

কোথাও রাত্রিতে এক সমুদ্রের পারে । জীবনানন্দ দাশ । পাণ্ডুলিপি কাব্যগ্রন্থ,২০০৫

 

জীবনানন্দ দাশ ১৮৯৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৮ ফেব্রুয়ারি ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির (বর্তমানে বাংলাদেশ) অন্তর্গত বরিশাল শহরে জন্মগ্রহণ করেন৷ তার পূর্বপুরুষগণ বাংলাদেশের ঢাকা জেলার বিক্রমপুর(বর্তমান মুন্সীগঞ্জ) পরগণার কুমারভোগ নামক স্থানে “গাওপারা” গ্রামের নিবাসী ছিলেন যা পদ্মায় বর্তমানে বিলীন হয়ে গেছে৷ স্থানটি মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলায় অবস্থিত৷

তার পিতামহ সর্বানন্দ দাশগুপ্ত (১৮৩৮-৮৫) বিক্রমপুর থেকে বরিশালে স্থানান্তরিত হন৷সর্বানন্দ দাশগুপ্ত জন্মসূত্রে হিন্দু ছিলেন; পরে ব্রাহ্মধর্মে দীক্ষা নেন৷ তিনি বরিশালে ব্রাহ্ম সমাজ আন্দোলনের প্রাথমিক পর্যায়ে অংশগ্রহণ করেন এবং তার মানবহিতৈষী কাজের জন্যে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হন৷

আরও দেখুনঃ 

Leave a Comment