জীবনের সাথে কবিতাটি অপ্রকাশিত জীবনানন্দ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত। অপ্রকাশিত জীবনানন্দ ১ম খন্ড কবি জীবনানন্দ দাশ এর কাব্যগ্রন্থ যা ২০১৫ সালে প্রকাশিত হয়। গৌতম মিত্র -এর সম্পাদনায় এটি প্রকাশিত হয়। কবির অগ্রন্থিত কবিতাবলি নিয়ে প্রকাশিত কবিতা সংকলনগুলোর একটি হলো অপ্রকাশিত-জীবনানন্দ ১ম খন্ড । এই গ্রন্থটি মোট ৩৬টি সতন্ত্র কবিতা রয়েছে।
জীবনের সাথে
কবিতা: জীবনের সাথে
কবির নাম: জীবনানন্দ দাশ
কবি: জীবনানন্দ দাশ
কাব্যগ্রন্থের নাম: পাণ্ডুলিপির কবিতা
জীবনের সাথে আমাদের রূঢ় পরিচয় হয়েছিল
হয়তো-বা হয়েছিল মূঢ় পরিচয়
অনুরাধা- শতভিষা নক্ষত্রের রূপ হয়তো-বা পঞ্জিকায় দেখে গেছি।
নগরীর নোনাধরা দেয়ালের দ্রাঘিমার পার দিয়ে
লম্বপট আকাশের দিকে চোখ ফেরাতেই
গৃহিনীর অম্লব্যারামের বিম্বে
ছয়টি শিশুর শুশুকের মতো আপ্লুত আকীর্ণ ক্ষোভে আবার এসেছি ফিরে
মারী-ভিষকের মতো ব’সে আছে গৃহ যেন মড়কের ইঁদুরের ভিড়ে।
এক আধ মূহুর্ত শুধু-
তারপর ইঁদুরের জয় পেল- জয়- তবু মোর মেরুদণ্ড, মনন, আঁধার
‘ধাড়ি ইঁদুরের মতো মনে হয় কেউ নাই আর’
বলিল গৃহিনী স্ফুরে তাহার মুমূর্ষু চোখে নিখিল জড়ায়ে
মানুষের চামড়াও এই সদ্য-অমৃতার গায়ে
নেই
তার আর আমাদের যাত্রা তবে পঞ্জিকার নক্ষত্রপথেই।
জীবনানন্দ দাশ ছিলেন বিংশ শতাব্দীর অন্যতম প্রধান আধুনিক বাঙালি কবি, লেখক ও প্রাবন্ধিক৷ তিনি বাংলা কাব্যে আধুনিকতার পথিকৃতদের মধ্যে অন্যতম৷ তার কবিতায় পরাবাস্তবের দেখা মিলে৷ জীবনানন্দের প্রথম কাব্যে নজরুল ইসলামের প্রভাব থাকলেও দ্বিতীয় কাব্য থেকেই তিনি হয়ে ওঠেন মৌলিক ও ভিন্ন পথের অনুসন্ধানী।
মৃত্যুর পর থেকে শুরু করে বিংশ শতাব্দীর শেষ ভাগে তিনি জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করেন এবং ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দে যখন তার জন্মশতবার্ষিকী পালিত হচ্ছিল, ততদিনে তিনি বাংলা সাহিত্যের অন্যতম জনপ্রিয় কবিতে পরিণত হয়েছেন ৷ গ্রামবাংলার ঐতিহ্যময় নিসর্গ ও রূপকথা-পুরাণের জগৎ জীবনানন্দের কাব্যে হয়ে উঠেছে চিত্ররূপময়, তাতে তিনি ‘রূপসী বাংলার কবি’ অভিধায় খ্যাত হয়েছেন৷