যত দিন বেঁচে আছি আকাশ চলিয়া গেছে কোথায় আকাশে – রূপসী বাংলা কাব্যগ্রন্থ বাংলা ভাষার অন্যতম প্রধান কবি জীবনানন্দ দাশের সর্বাধিক জনপ্রিয় কাব্যগ্রন্থ। এটি তাঁর সপ্তম কাব্যগ্রন্থ। রূপসী বাংলা কাব্যসংকলনটির প্রথম প্রকাশ ১৯৫৭ খ্রিষ্টাব্দে ।কবি জীবদ্দশায় এ গ্রন্থটি বা এর অন্তর্ভুক্ত কোন কবিতা প্রকাশ করেন নি। ১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দে দুঘর্টনায় অকালমৃত্যুর পর এর পাণ্ডুলিপির খাতাটি আবিষ্কৃত হয়। কবি এ গ্রন্থটির প্রচ্ছদনাম নির্বাচন করেছিলেন বাংলার ত্রস্ত নীলিমা। জীবনানন্দ কেন স্বীয় জীবদ্দশায় এ কাব্যগন্থটি প্রকাশ করেননি তা অদ্যাবধি এক পরম বিস্ময় হয়ে আছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে এ কাব্যের কবিতাগুলি বাঙালিদের বিশেষভাবে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছিল।
যত দিন বেঁচে আছি আকাশ চলিয়া গেছে কোথায় আকাশে
কবিতা:যত দিন বেঁচে আছি আকাশ চলিয়া গেছে কোথায় আকাশে
কবির নাম: জীবনানন্দ- দাশ
কবি: জীবনানন্দ -দাশ
কাব্যগ্রন্থের নাম:রূপসী বাংলা কাব্যগ্রন্থ
যতদিন বেঁচে আছি আকাশ চলিয়া গেছে কোথায় আকাশে
অপরাজিতার মতো নীল হয়ে—আরো নীল—আরো নীল হয়ে
আমি যে দেখিতে চাই;—সে আকাশ পাখনায় নিঙড়ায়ে লয়ে
কোথায় ভোরের বক মাছরাঙা উড়ে যায় আশ্বিনের মাসে,
আমি যে দেখিতে চাই;—আমি যে বসিতে চাই বাংলার ঘাসে;
পৃথিবীর পথে ঘুরে বহু দিন অনেক বেদনা প্রাণে স’য়ে
ধানসিড়িটির সাথে বাংলার শ্মশানের দিকে যাব ব’য়ে,
যেইখানে এলোচুলে রামপ্রসাদের সেই শ্যামা আজো আসে,
যেইখানে কল্কাপেড়ে শাড়ি প’রে কোনো এক সুন্দরীর শব
চন্দন চিতায় চড়ে—আমের শাখায় শুক ভুলে যায় কথা;
যেইখানে সব চেয়ে বেশি রূপ—সব চেয়ে গাঢ় বিষণ্ণতা;
যেখানে শুকায় পদ্ম—বহু দিন বিশালাক্ষী যেখানে নীরব;
যেইখানে একদিন শঙ্খমালা চন্দ্রমালা মানিকমালার
কাঁকন বাজিত, আহা, কোনোদিন বাজিবে কি আর!
আরও দেখুন:
1 thought on “যত দিন বেঁচে আছি আকাশ চলিয়া গেছে কোথায় আকাশে – জীবনানন্দ দাশ ( রূপসী বাংলা কাব্যগ্রন্থ , ১৯৫৭ )”