বিবিধ ইন্টারভিয়্যুর শেষ কবিতাটি কবি জীবনানন্দ দাশ এর পাণ্ডুলিপি কাব্যগ্রন্থের ১৪তম খণ্ডে রচিত। যা ২০০৫ সালে প্রকাশিত হয়। গৌতম মিত্র ও ভূমেন্দ্র গুহ-এর সাথে যৌথ সম্পাদনায় এটি প্রকাশিত হয়। কবির অগ্রন্থিত কবিতাবলি নিয়ে প্রকাশিত কবিতা সংকলনগুলোর একটি হলো পাণ্ডুলিপি। এই গ্রন্থটি মোট ১৪টি খণ্ডে বিভক্ত রয়েছে।
বিবিধ ইন্টারভিয়্যুর শেষ
কবিতা: বিবিধ ইন্টারভিয়্যুর শেষ
কবির নাম: জীবনানন্দ দাশ
কবি: জীবনানন্দ দাশ
কাব্যগ্রন্থের নাম: পাণ্ডুলিপির কবিতা
চেয়ে দেখি যে যাহার পরিচিত স্থানে এসে বসে
প্রভাত জাগায়ে তোলে পৃথিবীর রোজ
রাতের ভিতর থেকে যে-রকম অবলীলাক্রমে ভোর নামে
সে-রকম স্বাভাবিক নয়, তবু তেমন সহজ
আপনার প্রকীর্তিত স্থান অধিকার ক’রে বসা
কবলে এনেছে যারা যে যাহার স্থান
প্রাগৈতিহাসিক মাছ বহু দিন ধ’রে
আপনার ঐতিহ্য-প্রমাণ
ক’রে লক্ষ বৎসরের জন্ম দিয়ে যায়
পুনরায় লক্ষ বৎসরের
মহাপৃথিবী ছেড়ে তিলের ভিতরে
হেস, মান, হ্যালিফ্যাক্স রুপসির গালের তিলের
সঙ্কুলান আছে জেনে জন-পরিজন নিয়ে আমি
ঢুকেছি যখন মূক মায়াবীর বলে
আমাদের সকলকে অভ্যর্থনা ক’রে তারা যে যার আসন
পুনরায় নিয়ে গেল নিজের দখলে
কী ক’রে বিহিত তবু করা যায় এর
পৃথিবী সহজ আজ হয়তো-বা- তবুও অধিক
স্বাভাবিক না হয়ে সে অবিকল কলের আমোদে
যতই ব্রহ্মাণ্ডে ব্যাপ্ত হয়ে যায় ততই অমেয় আণবিক।
জীবনানন্দ দাশ ছিলেন বিংশ শতাব্দীর অন্যতম প্রধান আধুনিক বাঙালি কবি, লেখক ও প্রাবন্ধিক৷ তিনি বাংলা কাব্যে আধুনিকতার পথিকৃতদের মধ্যে অন্যতম৷ তার কবিতায় পরাবাস্তবের দেখা মিলে৷ জীবনানন্দের প্রথম কাব্যে নজরুল ইসলামের প্রভাব থাকলেও দ্বিতীয় কাব্য থেকেই তিনি হয়ে ওঠেন মৌলিক ও ভিন্ন পথের অনুসন্ধানী।
মৃত্যুর পর থেকে শুরু করে বিংশ শতাব্দীর শেষ ভাগে তিনি জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করেন এবং ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দে যখন তার জন্মশতবার্ষিকী পালিত হচ্ছিল, ততদিনে তিনি বাংলা সাহিত্যের অন্যতম জনপ্রিয় কবিতে পরিণত হয়েছেন ৷ গ্রামবাংলার ঐতিহ্যময় নিসর্গ ও রূপকথা-পুরাণের জগৎ জীবনানন্দের কাব্যে হয়ে উঠেছে চিত্ররূপময়, তাতে তিনি ‘রূপসী বাংলার কবি’ অভিধায় খ্যাত হয়েছেন৷