সময়বিহীন এক ভাঁড় । জীবনানন্দ দাশ । পাণ্ডুলিপি কাব্যগ্রন্থ,২০০৫

সময়বিহীন এক ভাঁড় কবিতাটি কবি জীবনানন্দ দাশ এর পাণ্ডুলিপি কাব্যগ্রন্থের ১০ম খণ্ডে রচিত। যা ২০০৫ সালে প্রকাশিত হয়। গৌতম মিত্র ও ভূমেন্দ্র গুহ-এর সাথে যৌথ সম্পাদনায় এটি প্রকাশিত হয়। কবির অগ্রন্থিত কবিতাবলি নিয়ে প্রকাশিত কবিতা সংকলনগুলোর একটি হলো পাণ্ডুলিপি। এই গ্রন্থটি মোট ১৪টি খণ্ডে বিভক্ত রয়েছে।

 

সময়বিহীন এক ভাঁড় । জীবনানন্দ দাশ । পাণ্ডুলিপি কাব্যগ্রন্থ,২০০৫

 

সময়বিহীন এক ভাঁড়

কবিতা: সময়বিহীন এক ভাঁড়
কবির নাম: জীবনানন্দ দাশ
কবি: জীবনানন্দ দাশ
কাব্যগ্রন্থের নাম: পাণ্ডুলিপির কবিতা

 

সময়বিহীন এক ভাঁড় । জীবনানন্দ দাশ । পাণ্ডুলিপি কাব্যগ্রন্থ,২০০৫

 

দেখা গেল দাঁড়ায়ে রয়েছে সেই সময়বিহীন এক ভাঁড়
মাথার উপরে তার বম্বার-নক্ষত্রেরা- রাত্রির আঁধার
তাহার পায়ের নিচে কমলালেবুর মতো গোল পেটে ফুলে
পৃথিবী চলেছে যেন বাতাসের নাড়া খেয়ে ঢুলে

তবু সে-পায়ের তাড়া সে-ভাঁড়ের- বাতাস কোথায়
জল নেই- তবুও যা শুশুকের মতন লাফায়
আঁধারে বালিশে মাথা রেখে দিয়ে চোখ বুজে নিলে
ভালো ক’রে ঘুমাবার আগে এই পৃথিবীর স্তিমিত সলিলে
তেমন চালিত হয়ে হলুদ রঙের এক নদীর কল্লোলে
ভাঁড়, টুপি, ছড়ি আর প্যান্টালুন দোলে

হয়তো খ্রিস্টীয় আত্মা- কিংবা উর, ময়ের প্রতীক
অথবা পিচ্ছিল পেঁচা- কিংবা কোনও সমীচীন গ্রীক
ছিঁড়ে গেছে- ফেঁড়ে গেছে- সময়ের খোঁচা খেয়ে- হেসে
আমারে হাসাতে গিয়ে অব্যয়ের অন্ধকার থেকে ক্রমে ফেঁসে
আবার সে দাঁড়ায়েছে অধিকার ক’রে সব আধুনিক দিন
প্রতিটি বোতাম, টাই, নখ, লোম, লেজ তার সময়বিহীন।

 

সময়বিহীন এক ভাঁড় । জীবনানন্দ দাশ । পাণ্ডুলিপি কাব্যগ্রন্থ,২০০৫

 

জীবনানন্দ দাশ ১৮৯৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৮ ফেব্রুয়ারি ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির (বর্তমানে বাংলাদেশ) অন্তর্গত বরিশাল শহরে জন্মগ্রহণ করেন৷ তার পূর্বপুরুষগণ বাংলাদেশের ঢাকা জেলার বিক্রমপুর(বর্তমান মুন্সীগঞ্জ) পরগণার কুমারভোগ নামক স্থানে “গাওপারা” গ্রামের নিবাসী ছিলেন যা পদ্মায় বর্তমানে বিলীন হয়ে গেছে৷ স্থানটি মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলায় অবস্থিত৷

তার পিতামহ সর্বানন্দ দাশগুপ্ত (১৮৩৮-৮৫) বিক্রমপুর থেকে বরিশালে স্থানান্তরিত হন৷সর্বানন্দ দাশগুপ্ত জন্মসূত্রে হিন্দু ছিলেন; পরে ব্রাহ্মধর্মে দীক্ষা নেন৷ তিনি বরিশালে ব্রাহ্ম সমাজ আন্দোলনের প্রাথমিক পর্যায়ে অংশগ্রহণ করেন এবং তার মানবহিতৈষী কাজের জন্যে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হন৷

Leave a Comment