এই নগরীর । জীবনানন্দ দাশ । অপ্রকাশিত জীবনানন্দ,২০১৫

এই নগরীর কবিতাটি অপ্রকাশিত জীবনানন্দ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত। অপ্রকাশিত জীবনানন্দ ১ম খন্ড কবি জীবনানন্দ দাশ এর কাব্যগ্রন্থ যা ২০১৫ সালে প্রকাশিত হয়। গৌতম মিত্র -এর  সম্পাদনায় এটি প্রকাশিত হয়। কবির অগ্রন্থিত কবিতাবলি নিয়ে প্রকাশিত কবিতা সংকলনগুলোর একটি হলো অপ্রকাশিত জীবনানন্দ ১ম খন্ড । এই গ্রন্থটি মোট ৩৬টি সতন্ত্র কবিতা রয়েছে।

 

এই নগরীর । জীবনানন্দ দাশ । অপ্রকাশিত জীবনানন্দ,২০১৫

 

এই নগরীর

কবিতা: এই নগরীর
কবির নাম: জীবনানন্দ দাশ
কবি: জীবনানন্দ দাশ
কাব্যগ্রন্থের নাম: পাণ্ডুলিপির কবিতা

 

এই নগরীর । জীবনানন্দ দাশ । অপ্রকাশিত জীবনানন্দ,২০১৫

 

এই নগরীর সেই সব শতাব্দীর ধূসর পরিখা কই
পাণ্ডুলিপি হাতে নিয়ে প্রত্নতাত্ত্বিকেরা টেবিলের চারপাশে ব’সে আছে
নেকটাই- হ্যাট- এক্সটেনশন লেকচারের ঘ্রাণ
বিচক্ষণ সদনটিয়ার মতো সচ্ছল; এখন চায়ের অবসর
মার্থালেন- সিগারেট-
জ্যৈষ্ঠের দুপুরে হাওয়া
অই দূর সিন্ধুর দ্যুতির দিকে চ’লে যায়
আমাদের শুধু দিকনির্ণয়ের ভুল
ফুলসাজে তবু মূল নাই- মূল আছে, ফুল
নাই। নাকের ডগায় মাছি; কণ্ঠার উপরে মৃত মাছি; মৃত্যু
কাহারও-কাহারও রোমশ কুশলী হাতে- মরুভূর উটের আঘ্রাণ-
গোবির বালিতে।

চারিদিকে নগরীর পুনরুজ্জীবনের সুর
এরপর কারও আর তিলে-তিলে মৃত্যু হবে না ক’
মৃত্যু বিজ্ঞাপিত হবে- সব মৃত্যু
সকল শবের চুল পরিপাটি ক’রে আঁচড়ায়ে দেওয়া হবে।

সাদা আকাশের প্রান্ত থেকে সাদা মিনারের চূড়ার তরঙ্গ
এপারের দেয়ালের থেকে ওপারের ধূসর দেয়াল
লুব্ধ হাত বাড়াতেই শেষ হয়ে যায়
কুকুর ও বিহঙ্গেরা ছটফট করে তাই
পথের ভিতরে পথ গোলকধাঁধার মতো চ’লে গেছে- সেই ধূম্র
যুবনাশ্বের দিন থেকে?

পথে-পথে সৃষ্টি সমুদ্রের সুর ভোরের আলোয়? সৃষ্টি সমুদ্রের সুর।
আমাদের ফেলে কেন সৃষ্টি কর?- আর্ত ডান হাত তুলে
অনেক সেকেলে বর্ম, অনেক বিকট যুদ্ধ, অনেক অনৃত মৃত
সময়ের কাছে নিষেধ জানাতে ভুলে গেছে।

 

এই নগরীর । জীবনানন্দ দাশ । অপ্রকাশিত জীবনানন্দ,২০১৫

 

জীবনানন্দ দাশ ১৮৯৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৮ ফেব্রুয়ারি ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির (বর্তমানে বাংলাদেশ) অন্তর্গত বরিশাল শহরে জন্মগ্রহণ করেন৷ তার পূর্বপুরুষগণ বাংলাদেশের ঢাকা জেলার বিক্রমপুর(বর্তমান মুন্সীগঞ্জ) পরগণার কুমারভোগ নামক স্থানে “গাওপারা” গ্রামের নিবাসী ছিলেন যা পদ্মায় বর্তমানে বিলীন হয়ে গেছে৷ স্থানটি মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলায় অবস্থিত৷

তার পিতামহ সর্বানন্দ দাশগুপ্ত (১৮৩৮-৮৫) বিক্রমপুর থেকে বরিশালে স্থানান্তরিত হন৷সর্বানন্দ দাশগুপ্ত জন্মসূত্রে হিন্দু ছিলেন; পরে ব্রাহ্মধর্মে দীক্ষা নেন৷ তিনি বরিশালে ব্রাহ্ম সমাজ আন্দোলনের প্রাথমিক পর্যায়ে অংশগ্রহণ করেন এবং তার মানবহিতৈষী কাজের জন্যে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হন৷

 

Leave a Comment